একই পরিবারের চারজন অসুস্থ, একঘরে করে রেখেছে এলাকাবাসী
দুই মেয়ে, এক ছেলে এবং স্ত্রীকে নিয়ে ভীষণ দুশ্চিন্তায় পরেছেন মুদি ব্যবসায়ী যতিন্দ্রনাথ পাল। সন্তানদের বিয়ের বয়স পেরিয়ে গেছে। কিন্তু বিয়ে দিতে পারেননি। প্রতিবেশীদের কাছে তারা এখন ঘৃণার পাত্র। শুধু তিনি ছাড়া পরিবারের সব সদস্য এখন সারা শরীরে বহন করছে গুটি-গুটি টিউমার।
ডাক্তাররা এটিকে নিউরোফাইব্রমা বলে চিহ্নিত করেছেন। অর্থাভাবে সন্তানদের চিকিৎসা করতে না পেরে এই পরিবারটি এখন এক প্রকার একঘরে হয়ে গেছে।
জানা যায়, কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলা চত্বরের একশ গজ পাশেই বাজার সংলগ্ন যতিন্দ্রনাথের খুপড়ি ঘর। ছোট্ট মুদি দোকানের পেছনেই ঠাসাঠাসির সংসার। প্রায় ৫০ বছর আগে বিয়ে করেন ফুলু রানী পালকে। বিয়ের সময় তার স্ত্রীর শরীরে কোনো টিউমার না থাকলেও তিন সন্তান জন্মের পর প্রথমে ফুলু রানী তারপর একেএকে ছেলে বাবুলাল পাল মেয়ে পার্বতী রানী পাল ও অঞ্জনা রানী পালের শরীরে টিউমার দেখা দেয়।
১২ বছর বয়স পর্যন্ত এই রোগ দেখা না দিলেও ছেলে অষ্টম শ্রেণিতে আর দুই মেয়ে ৭ম শ্রেণিতে পড়ার সময় শরীরে টিউমার দেখা দেয়। অর্থাভাবে ভালো ডাক্তার দেখাতে না পারলেও স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা করিয়েছেন কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।
যতিন্দ্রনাথ পাল জানান, লোকজন আমাদের এখন ঘৃণার চোখে দেখে। আমরা কারও কাছে যেতে পারি না। যেন বড় কোনো পাপ করেছি। বড় ছেলের বয়স ৫০ আর দুই মেয়ের বয়স ৪০-৪৫ হলেও তাদের বিয়ে দিতে পারলাম না। সামান্য আয়ে খেয়ে না খেয়ে আছি। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, কেউ আমাদের পাশে এসে দাঁড়ায়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাউজুল কবীর জানান, দ্রুত তাদের নামের তালিকা করে সহযোগিতা করা হবে।
কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. আমিনুল ইসলাম জানান, রৌমারীতে একই পরিবারের কয়েকজন সদস্যের শরীরে অসংখ্য টিউমার দেখা দিয়েছে। এই রোগটিকে নিউরোফাইব্রমা বলে। মানুষ দীর্ঘদিন শরীরে বহন করলেও কোনো সমস্যা হয় না। তবে যদি ব্যথা হয় সেক্ষেত্রে অপারেশনের মাধ্যমে নিরাময় করা সম্ভব।
No comments